Friday, July 21, 2017

স্বপ্নের অপমৃত্যু

আজকা একহান স্বপন দেখি তো হাসতে হাসতে পেট ফাটি যাওয়ার উপক্রম কিন্তু ফাটেনাই। ফাটি গেলে প্রবলেমের টেবলেট হইত। স্বপনে মুই এতই স্কুল কলেজত যাই তা কবার নয় হে, গেইছি একডা কলেজত এইডা ফের গ্যারামের কলেজ কিন্তু শহরের আশে পাশেই। হো ক্লাস রুমে যাইয়া ঢুকি এগলা আমাগো ব্যাচের কেউই না এগলা ডিগ্রী পোলাপান আইছে পরীক্ষা দিবা।ঘুরিঘারে মুকে মুকে তাকিয়ে অনেক্কন পর কই হে এইডা কোন কলেজত আনু সব ক্যানেবা আলাদা কাওরে চিনি না। এইহানে থাহা উচিত হইবে না যাই অন্যহানে অডিটরিয়ামে গেনু দেহি মটু বান্ধবি কাজ করতাছে আমাটরে ডাকে ওই ভিতরত আয়। ধুত থাক মুই গেলাম এন্না ভাল লাগে না। স্কুল থেকে বাইর হইয়া গেনু।

তো আইতাছে গ্যারামের রাস্তা এই জায়গা জীবনেও দেখনাই এক পোলা মোক দ্যাখা পাইছে ওই নাকি মোকে চেনে, এইডাকো মুই চিনি না লম্বা চওড়া ফর্সা হবো মনে হয় আমি সপনে সূর্য দেখিনা খুব সকালের মত ঘোলাটে খুব নরম শান্তময় প্রকৃতি দেখি। ওই মোরে এমন ফলো করিবা ধরিছে।
মুই মনে মনে কহিনু, তুই হ্যা ফলোই কর মোর ইচ্ছা অনুযায়ী যেন্না ইচ্ছা ওন্নায় ঘুরি বেড়াম গ্যারাম ফাকা শুনশান বাতাস বইছে মানুষ জন দ্যাখা যায় না। একটা কেনবা দুর থেকে উচা মাটির ঢিবি অনেক চওড়া সওড়া বট গাছ আরো কিসের যেন গাছ । ওইখানে যাইম কি সুন্দর বট গাছের ঝুলগুলা ঝুলে আছে।
ভাবতাছি ওহ কি মজা এই ঝুলগুলা ধরে একটা ঝুল দিলে অনেকদুর যাওয়া যাবে আহা  অনেকদিন থেকে শয়তানি হয়নি। এই শালা মোকে অনুসরন করে চলে দুরে থেকে। হ্যা উঠে গেছি ঢিবিটা উঠা যায়না মনে হছে পাহাড়। জয় করলাম আনন্দে লাফাচ্ছি এইয়ো উঠি গেইছে এটে
আরেকডা মাইয়া ফের পোলাডারে  অনুসরন করে ওকে কয় তোরে মুই ভালোবাসি। এই পোলা মোরে অনুসন করে  মাইয়াডার কথা  কানই দেয়না। মেয়েটা যে কোথায় মিলিয়ে গেল আর দেখা নেই। ঢিবিটার ওপর লাফালাফি চিল্লাচিল্লির পর আবার ছুটে দৌড় গ্রামের মেঠো ধুলা রাস্তা দিয়ে। এই বদমাইশ খালি দুর থেকে আমার সাথে আসে যেখানে যাচ্ছি সেখানে এবার বিরক্তি। দাড়ালাম বদমাইশটা আসল, মুই ওর শার্টের কলার ধরে কহিনু, ওই মুই যেহানে যাই সেইহানে যাশ কেনে।
দেখে মনে হল সাহসী ভীতুর আন্ডা মাথাত গোবরের ঢিভ। ভয়ে কয় চোখ বন্ধ করে এক নিকাশে কহিল তোরে মুই ভালবাসি তোরে চিনি আমি। আমি কই এহ বদমাইশ ভালবাসার মানে কি?  কয় মুই জানি না তোরে মুই ভালবাসি। আমি তো রাগে তেলেবেগুনে এই তুই আসবি না আমার সাথে আর আসলে মজাটাই পাবি।

গেলাম একটা পাড়ার ভেতরে একটা বাড়িতে এগলা যে কে চিনি না একটারো। দেখতেছি মেশিন সুন্দর করে ডিজাইন ওয়ালা ছেলেমেয়েদের জুতা বানাচ্ছে। আমি বলছি সুন্দর তো কোথায় বেচেন? কয় হাজি দানেশের পোলাপাইন গুলার জুতা ভার্সিটিতে আসলে ছিড়ে গেলে টেমপরারি আমাদের এই বানানো পরে। পায়ে দিয়ে আরাম করে বাড়ি যায় যার যেখানে গন্তব্য সেখানে শুধু একবারই কোনমত পরে যেয়ে পৌছা যায় ওদের জন্যই এই জুতা শুধু বানানো হয়। মুই একটা মাটির ঘরে গিয়ে শুয়ে আছি। এই শালা বদমাইশ আমাকে জানালা দিয়ে এক পলক দেখে আছে খুব শান্ত নিরব ভ্যাবলার মত মনে হচ্ছে কত দিন থেকে দেখেনি আর কোন দিনো দেখতে পাবেনা। আমি পেছন থেকে যেয়ে ওর কানটা ধরে ওই এইহানে কি করোছ তোর বাড়ি কোথায় রে কোথায় পড়ালেখা করিস? ভিতুটা কয় বাড়ির পথ ভুলে গেছি কোথায় যে আসছিলাম। আমি কই দাড়া,  মার না যদি খাইতে চাইশ কেটে পড় তাড়াতাড়ি।কয় আমি যাব না। মুই কহিনু, যা ভাল করে পড়াশুনা করবি আর জ্ঞানী হবি আর সাহসী হবি যা যা। ওই সামনে একটা রাস্তা আছে ওইতো একটা লোক যাচ্ছে ওর পিছু পিছু বাড়ি যা।
সরু রাস্তা দুই ধারে জঙ্গল এমন জঙ্গল ঘুটঘুটা কিছু দেখা যায় না আর জঙ্গলের ভেতর থেকে যে ভয়ংকর আওয়াজ আসতেছে। আমি রাস্তাটার ভিতর দিয়ে যাইতেছি।কিছু রাস্তা যাওয়ার পর ওই পিছু নেওয়া ছেলেটা ভয়ে উল্টে পেছন ঘুরে দৌড় বলে আমি যেতে পারব না আমি যেতে পারব না আমার দ্বারা এ পথ পার হওয়া সম্ভব না কখনো না।আমি বললাম এইটাই তোর ভালবাসার প্রমাণ হবে এই জঙ্গলময়ী ভয়ংকর রাস্তা পার হওয়া। এ রাস্তা যে ভয় পায় সে পার হতে পারে না। অন্য যুবক ছেলেরা তো নিমিষেই পার হচ্ছে কিচ্ছু হয়না। 

ফজরের আযান পড়ল স্বপ্নটা ভেঙ্গে গেল। উঠে নামায পড়ে আবার সুয়ে পড়ছি।  বৃষ্টি আসতেছে,সুয়ে সুয়ে  ভাবছি আবার স্বপ্নের কথা আর হাসতেছি। এবার হাসিটা থেমে গেল আসলে এ জঙ্গলময় ভয়ংকর রাস্তাটা কেন দেখলাম?
কেন?  কেন? কেন? কোন উত্তর খুজে পাই না। এই ভাবেই সব যেন কেনর মাঝে হারিয়ে যেতে লাগল...

স্বপ্ন দ্রষ্টাঃ মায়া
সম্পাদনায়ঃ কাঠবিড়ালি